কলকাতা: আহিরীটোলা কাণ্ডে (Ahiritola Trolley Bag Case) একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে। পুলিশ ধৃত মা ও মেয়েকে প্রাথমিকভাবে জেরা করেছে এবং আজ বুধবার কলকাতার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়েছিল। বিচারক ধৃতদের এক দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। আগামীকাল, বৃহস্পতিবার তাদের বারাসত আদালতে তোলা হবে।
এই মামলায় (Ahiritola Trolley Bag Case) উল্লেখ্য, মহিলার টুকরো করা মৃতদেহ একটি ট্রলি ব্যাগে ভরে মা ও মেয়ে আহিরীটোলায় গঙ্গারঘাটে গিয়েছিলেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল মৃতদেহটি গঙ্গায় ফেলে দেওয়া। স্থানীয়রা তাদের দেখে ফেলে এবং পরে জানা যায় যে, সুমিতাকে হত্যা করা হয়েছিল মধ্যমগ্রামে। ফলে, মামলার তদন্ত এখন মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশের হাতে। কলকাতা পুলিশ এই তদন্তে থাকা তথ্যগুলো মধ্যমগ্রাম পুলিশের কাছে হস্তান্তর করবে, এমন নির্দেশ আদালত দিয়েছেন।
এদিনই ফাল্গুনী ঘোষকে নিয়ে নর্থ পোর্ট থানার ফরেনসিক আধিকারিকরা মধ্যমগ্রামে ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন, যেখানে ধৃত মা-মেয়ে ভাড়া থাকতেন। তদন্তকারীরা সেখানে একটি ইট উদ্ধার করেছেন, যা খুনে ব্যবহার করা হয়েছিল। ঐ বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত জমিতে ওই ইটটি পাওয়া যায়। তবে, মৃতদেহের কিছু অংশ, বিশেষ করে বটির মাধ্যমে কাটা পা এখনও উদ্ধার হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, সেগুলো পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

মৃত সুমিতার স্বামী অসমের জোরহাটের বাসিন্দা। প্রায় পাঁচ বছর ধরে তার সঙ্গে যোগাযোগ নেই। অপরদিকে, ফাল্গুনীর স্বামী শুভঙ্করও থাকেন অসমের জোড়হাটে, সেখানে তার বৈদ্যুতিন সামগ্রীর দোকান রয়েছে। ফাল্গুনী ও শুভঙ্করের বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। ফাল্গুনী এবং তার মা আরতি মধ্যমগ্রামে ভাড়া থাকতেন, এবং সুমিতা সেখানে তাদের সঙ্গে থাকতে আসেন।
এদিকে, সুমিতা ও ফাল্গুনি, দু’জনেই নিঃসন্তান ছিলেন। ফলে সুমিতার ব্যাঙ্কের লকারে থাকা ৭০ ভরি সোনার গয়নার উত্তরাধিকারী কে হবে, তা নিয়ে পরিবারের মধ্যে জল্পনা ছিল। ধৃতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সুমিতার সেই গয়না এবং সাড়ে তিন লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যেই তারা খুনের পরিকল্পনা করে। রবিবার দুপুরে সম্পত্তি নিয়ে অশান্তি শুরু হলে, ফাল্গুনী ইট দিয়ে পিসিশাশুড়িকে খুন করেন। পরে, মৃতদেহটি অন্য কোথাও ফেলার পরিকল্পনা করে তারা।
অভিযুক্ত মা ও মেয়ে সোমবার বিভিন্ন জায়গায় মৃতদেহ ফেলার জন্য জায়গা খুঁজে বেড়ান। এই ঘটনার তদন্তে মেধা এবং চাঞ্চল্যকর তথ্যগুলি সামনে আসছে, যা আগামী দিনগুলিতে আরও কিছু নতুন রহস্য উন্মোচন করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এখন এই মামলার শুনানি বারাসত আদালতে হবে এবং এর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।