কলকাতার যোগেশ চন্দ্র চৌধুরী ল কলেজে সরস্বতী পুজো করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে রাজ্যজুড়ে বিতর্ক তুঙ্গে (Firhad Hakim)। অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল ছাত্র নেতা সাব্বির আলির বিরুদ্ধে, যিনি পুজো বন্ধ করতে ছাত্রদের ধর্ষণ ও খুনের হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ (Firhad Hakim)। এই ঘটনা গড়ায় কলকাতা হাই কোর্ট পর্যন্ত, যার পর পুলিশি নিরাপত্তায় কলেজে পুজো হয় (Firhad Hakim)। এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখালেন ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)।
সরস্বতী পুজোর দিন কলেজে উপস্থিত হয়েছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেখানে তাঁকে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগানের মুখে পড়তে হয়, এমনকি কলেজের এক ছাত্রী প্রকাশ্যে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এরপর তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ দাবি করেন, সেই ছাত্রী “নাটক করছেন”। তবে এবার একই ঘটনায় ভিন্ন অবস্থান নিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
যোগেশ চন্দ্র চৌধুরী ল কলেজের ঘটনার প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “এই ঘটনা যদি সত্যি হয়, তাহলে অবশ্যই গ্রেফতার করা উচিত। আজকাল এসব ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। কেন এই ধরনের হুমকি আসবে? বাংলার সংস্কৃতিতে আমরা মহিলাদের দেবী রূপে দেখি, তাঁদের নিয়ে এই ধরনের চিন্তাভাবনা করা পাপ। পুজো নিয়ে রেষারেষি করা অসভ্যতা। সরস্বতী পুজো মানেই আনন্দ, সেখানে এই ধরনের ঘটনা কেন ঘটবে?”
যদিও তিনি সরাসরি সাব্বির আলির নাম নেননি, তবে তাঁর বক্তব্য যে এই ঘটনার দিকেই ইঙ্গিত করছে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। ল কলেজের পড়ুয়াদের অভিযোগ, সরস্বতী পুজোর আয়োজন করতে গেলে সাব্বির আলি কলেজে ঢুকে হুমকি দেন। তিনি হুমকি বলেন, “পুজো করলে ছাত্রদের খুন করে দেওয়া হবে
রাস্তা দিয়ে বেরোলে দেখে নেওয়া হবে। মেয়েদের ঘরে ছেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। এই বিষয়ে ছাত্রছাত্রীরা চারু মার্কেট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এমনকি কলেজের অধ্যক্ষের কাছেও অভিযোগ জমা পড়ে।
এই প্রথম নয়, আগেও সাব্বির আলির বিরুদ্ধে কলেজ ক্যাম্পাসে দাপট দেখানো ও সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হয়েছিল এবং আদালত তাঁর কলেজে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তিনি ও তাঁর দলবল ক্যাম্পাসে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। এই বিতর্কিত ঘটনার পর খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। সূত্রের খবর, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর নেতৃত্বে একটি রিপোর্ট প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা কলেজে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবে।
এখন প্রশ্ন একটাই— তৃণমূল ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে কি এবার কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে? নাকি রাজনৈতিক রঙ লাগিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা পড়বে?