কলকাতা: ভোটের আগে রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আই-প্যাক (I-PAC)। এবার সরাসরি আইপ্যাকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর দাবি, পশ্চিমবঙ্গের ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (ওয়েবেল)-এ চুক্তিভিত্তিকভাবে নিয়োগ করা হয়েছে বহু আইপ্যাক কর্মীকে। এর ফলে ভোটের সময় তাঁদের ব্যবহার করা হতে পারে ভোট লুঠের কাজে।
শনিবার বিজেপি-র পক্ষ থেকে অভিযোগের সুর চড়িয়েছেন সুকান্ত। তিনি বলেন, “বিরোধী দলনেতা আগেই বলেছেন ওয়েবেলে প্রচুর আইপ্যাকের কর্মচারীকে চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসাবে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে তাঁদের ব্যবহার করা হতে পারে ভোট লুঠের ক্ষেত্রে।” তিনি আরও বলেন, “গণতন্ত্রের স্বাভাবিক নিয়ম আছে। কিন্তু এই ধরনের এজেন্সিগুলি যদি ঘরে বসে কাজ করে, তাহলে সমস্যা নেই। কিন্তু একুশের ভোটে আমরা দেখেছিলাম যে এরা মাঠে নেমে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। সেই সময় দেখা গিয়েছিল বাড়ি বাড়ি গিয়ে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্টে পাঁচশো টাকা করে পাঠানো হয়েছিল। আমি নিজেও কয়েকজনকে ধরেছিলাম।”
তিনি আরও বলেন, “এই ধরনের এজেন্সির কার্যকলাপ কি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পক্ষে স্বাস্থ্যকর? যদি তারা নিচে নেমে ভোটারদের মত পরিবর্তনের চেষ্টা করে, তাহলে এই বিষয়ে তর্ক-বিতর্ক হওয়া প্রয়োজন।”
অন্যদিকে, আইপ্যাকের উপরই পূর্ণ ভরসা রেখেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি তিনি অভিযোগ করেন, আইপ্যাকের নাম করে টাকা তোলা হচ্ছে, এমন কিছু খবর তাঁর কাছে এসেছে। তিনি জানান, “আইপ্যাকের নাম করে ব্লক সভাপতি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা চাওয়া হচ্ছে। আমি একটি নম্বর দিচ্ছি, সেখানে ফোন করে যাচাই করে নিন।” তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “আইপ্যাক একটি স্বাধীন সংস্থা। তারা নিজেদের মতো কর্মী নিয়োগ করে। বিজেপি এই ধরনের অভিযোগ যত কম করবে, ততই মঙ্গল।”
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় আইপ্যাকের ভূমিকা নিয়ে বহু বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, ভোটারদের প্রভাবিত করতে আর্থিক লেনদেনের কাজ করেছিল এই সংস্থা। যদিও তৃণমূল কংগ্রেস সবসময় এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। এবার ওয়েবেলে আইপ্যাক কর্মীদের নিয়োগের প্রসঙ্গ নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্ক উসকে দিয়েছে। ভোট যত এগিয়ে আসছে, এই নিয়ে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।