পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে সন্ন্যাসীদের (Kartik Maharaj) ভূমিকা নিয়ে ফের জল্পনা বাড়ল। সদ্য পদ্মশ্রী সম্মানপ্রাপ্ত সন্ন্যাসী স্বামী প্রদীপ্তানন্দ, যিনি কার্তিক মহারাজ (Kartik Maharaj)নামেও পরিচিত, রাজনীতিতে আসার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাঁর মন্তব্যে বাংলার রাজনৈতিক অঙ্গনে শোরগোল পড়ে গেছে।
রবিবার এক সাক্ষাৎকারে কার্তিক মহারাজ (Kartik Maharaj) বলেন, “সন্ন্যাসীদের এখন রাজনীতিতে আসার সময় হয়েছে। রাজনীতি হল সবচেয়ে বড় নীতি। কিন্তু এখন রাজনীতি নোংরা হয়ে গিয়েছে। যে দল সনাতন ধর্মকে রক্ষা করবে এবং দেশের সংবিধানকে মানবে, আমি তাদের পাশে থাকব।” তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট, তিনি বিজেপির দিকেই ইঙ্গিত করছেন। যদিও সরাসরি কোনও দলের নাম নিতে তিনি নারাজ।
২০২১ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন, তিনি বিজেপির হয়ে ধর্মের নামে প্রচার চালাচ্ছেন। মমতার চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষিতে কার্তিক মহারাজের এই ইঙ্গিতবাহী মন্তব্য নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। মমতা বলেছিলেন, “আপনি বিজেপি করুন, কিন্তু দলের প্রতীক বুকে লাগিয়ে করুন। লুকিয়ে লুকিয়ে কেন? ভোটের আগে দাঙ্গা করিয়ে যারা তৃণমূল এজেন্টদের বসতে দিচ্ছে না, তাদের ছেড়ে দেব না।”
এর আগেও তৃণমূলের এমন চ্যালেঞ্জের মুখে রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ে নেমে তমলুকে তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যকে হারিয়েছিলেন। রাজনীতিতে সন্ন্যাসীদের ভূমিকা নিয়ে কার্তিক মহারাজ বলেন, “অনেকে লুকিয়ে রাজনীতি করছেন। তবে সন্ন্যাসীদের এখন সামনে এসে দেশের জন্য কাজ করার সময়।” তাঁর এই মন্তব্যে বিজেপি শিবিরে উৎসাহ বাড়লেও, তৃণমূলের জন্য এটি নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কার্তিক মহারাজের মতো জনপ্রিয় সন্ন্যাসী রাজনীতিতে যোগ দিলে তা বিজেপির জন্য বড় সুবিধা হতে পারে। তবে তিনি আদৌ সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে অংশ নেবেন কিনা, তা এখনও নিশ্চিত নয়। সন্ন্যাসী ও ধর্মীয় নেতাদের রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি হতে পারে। কার্তিক মহারাজের বক্তব্য ইতিমধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তাঁর সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতের রাজনীতিকে কীভাবে প্রভাবিত করবে, তা সময়ই বলবে।