আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রীর ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়কে (Sanjay Roy) শিয়ালদহ আদালতের ফার্স্ট জাজ অনির্বাণ দাস আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে রাজ্য সরকার হাইকোর্টে দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তি, অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে মামলা দায়ের করেছে (Sanjay Roy)। এই পরিস্থিতিতে, মামলার নতুন মোড় এনে আইনজীবী যশ জালান সঞ্জয়ের (Sanjay Roy) পক্ষে মামলা লড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন । কিন্তু সঞ্জয় (Sanjay Roy) স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি তাঁকে চান না।
আইনজীবী যশ জালান দাবি করেন, নিম্ন আদালতে বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হয়েছে এবং মামলার তিনজন সাক্ষীকে ক্রস এক্সামিন করা হয়নি। তিনি বলেন, “এই সাক্ষীদের নাম ও বক্তব্য সামনে আসা জরুরি। ন্যায়বিচারের জন্য বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা দরকার।”
তবে সঞ্জয় রায় নিজেই যশ জালানের পক্ষে মামলা লড়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। বিচারপতি দেবাংশু বসাক শুনানির সময় জালানকে প্রশ্ন করেন, “আপনি কি অভিযুক্তের কাছ থেকে ওকালতনামা পেয়েছেন?” জালান জানান, তিনি জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছিলেন। তবে সরকারি আইনজীবী দেবাশিস রায় আদালতে জানান, সঞ্জয় রায় তাঁকে মামলা লড়ার অনুমতি দেননি। বিচারপতি স্পষ্ট বলেন, “যদি অভিযুক্ত নিজেই আপনাকে না চান, তবে এখানে আর কিছু বলার নেই।”
সঞ্জয়ের হয়ে আগের মতোই লিগাল এইডের নিযুক্ত আইনজীবী সেঁজুতি চক্রবর্তী ও কবিতা সরকার মামলা পরিচালনা করবেন। সিনিয়র আইনজীবী কৌশিক গুপ্তও এই দলে যুক্ত। সঞ্জয় জানিয়েছেন, লিগাল এইডের মাধ্যমেই তিনি নিজের পক্ষ উপস্থাপন করতে চান এবং তার সর্বোচ্চ শাস্তি যেন না হয়, সেটাই তাঁর একমাত্র উদ্দেশ্য।
অন্যদিকে, হাইকোর্টের শুনানিতে তিলোত্তমার বাবা-মা জানিয়েছেন, আপাতত তাঁরা দোষীর ফাঁসি চান না। তাঁরা চান, আসল অপরাধীদের চিহ্নিত করা হোক এবং তাদের সামনে আনা হোক। নিম্ন আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাসের পর্যবেক্ষণ ছিল, এই ঘটনাটি “বিরলের মধ্যে বিরলতম” নয়, যা মৃত্যুদণ্ডের দাবি ন্যায্য করতে পারে। এই যুক্তিই আদালতে সঞ্জয়ের পক্ষের আইনজীবীরা গুরুত্ব দিয়েছিলেন।
এই মামলার বিচার ও সাজার প্রক্রিয়া ঘিরে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে আইনজীবী যশ জালানের যুক্তি ও সঞ্জয়ের সিদ্ধান্তে মামলাটি নতুন মাত্রা পেয়েছে। এর ফলে হাইকোর্টে রাজ্যের আবেদনের ভবিষ্যৎ এবং দোষীর শাস্তি সংক্রান্ত রায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
তিলোত্তমা হত্যা মামলায় সর্বোচ্চ সাজা দাবির প্রশ্ন এখন আইনি ও নৈতিক দুই স্তরেই আলোচিত হচ্ছে। আদালতের রায় এবং ভবিষ্যৎ শুনানি কী দিক নির্দেশ করে, তা নজর রাখার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।