করোনার জীবনদায়ী ওষুধ ডেক্সামেথ্যাসোন সম্পর্কে জরুরি তথ্য জেনে রাখুন

 

খবর এই সময়, নিউজ ডেস্ক: করোনা সারাতেও  স্টেরয়েড ! হ্যাঁ ঠিক তাই। ব্রিটিশ গবেষকরা সম্প্রতি জানিয়েছেন,  স্টেরয়েড মলিকিউল ডেক্সামেথ্যাসোন করোনা সংক্রমণে জীবনদায়ী ওষুধ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। দেখা গিয়েছে, অতিসংকটাপন্ন কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে এই ওষুধে সুফল পাওয়া গিয়েছে। প্রতি আট জন রোগীর মধ্যে একজনের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হয়েছে এই ওষুধ। সেই সঙ্গে ওষুধের সহজলভ্যতা ও কম দাম রাতারাতি করোনা চিকিৎসায় সাড়া ফেলে দিয়েছে এই স্টেরয়েড।

সম্প্রতি  অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালযে এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রতিদিন একবার করে টানা ১০ দিন ডেক্সামেথ্যাসোন প্রয়োগের ফলে সঙ্কটাপন্ন রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কা উল্লেখজনক হারে কমে। ইংল্যান্ডের প্রধান স্বাস্থ্য অধিকর্তা অধ্যাপক ক্রিস হুইটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ভেন্টিলেশনে থাকা এবং অক্সিজেনের সাহায্যে নিঃশ্বাস নেওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে ফলদায়ী এই ওষুধ।

ডেক্সামেথ্যাসোন-এর সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে মানুষের অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি থেকে নিসৃত প্রাকৃতিক হরমোনের, যা অনেক সময় প্রদাহ সারাতে ব্যবহার করা হয়। করোনাভাইরাসের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ের জেরে কোষের অভ্যন্তরে প্রদাহ দেখা দেয়, যা সারাতে কাজে লাগে ডেক্সামেথ্যাসোন। আসলে মানুষের শরীরে থাকা জন্মগত রোগ প্রতিরোধ শক্তি অত্যধিক পরিশ্রম করলে মৃত্যুর আশঙ্কা ঘনায়। তা ঠেকাতেই এই স্টেরয়েড কার্যকরী হয়।

তবে এখানেই শেষ নয়, বিভিন্ন রকম আর্থ্রাইটিস এবং ত্বক, রক্ত, কিডনি, চোখ, থাইরয়েড ও পাকস্থলীজনিত সমস্যার চিকিৎসায় এই ওষুধ ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া কয়েক রকম অ্যালার্জি ও অ্যাজমা সারাতেও খুবই ফলপ্রসু  এই ওষুধ ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাWHO-এর প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় ১৯৭৭ সাল থেকেই রয়েছে ডেক্সামেথ্যাসোন এবং তার নানান রকম যৌগ। ওষুধটি বিভিন্ন নামে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই সহজলভ্য।

তবে ডেক্সামেথ্যাসোন-এর বেশ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে, যদিও তা নির্ভর করে ওষুধের পরিমাণ, অনেকগুলি পরিস্থিতি ও শারীরিক অবস্থার উপরে।

এই স্টেরয়েডের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে সাধারণত দেখা যায়, ওজনবৃদ্ধি, উচ্চ রক্তচাপ, হজমের গন্ডগোল, মাথাঘোরা, পটাশিয়ামের অভাব দেখা দেওয়া, সেরাম গ্লুকোজ মাত্রাবৃদ্ধি, বিশেষ করে যাঁদের ডায়াবিটিস রয়েছে, ঘুমের সমস্যা, পেশি দুর্বল হয়ে পড়া, ঋতুস্রাবের সমস্যা, হঠাৎ খিদে পাওয়া, মেজাজের আচমকা পরিবর্তন, শিশুদের ক্ষেত্রে বেড়ে ওঠার সমস্যা, ত্বকের ঘনত্ব কমে গিয়ে শরীরে ক্ষত তৈরি হওয়া, এমনকি মানসিক অবসাদ।

রোগীর যদি কোনও বিষয়ে অ্যালার্জির প্রবণতা থাকে, তাহলে ওষুধ খাওয়ার আগে তা চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীদের জানাতে হবে।

এই নিবন্ধে উল্লিখিত তথ্য সাধারণের জ্ঞাতার্থে প্রকাশিত হল। এগুলি কোনও মতেই স্বাস্থ্য বা চিকিৎসা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ হিসেবে গণ্য করা যাবে না। সমস্যা এড়াতে এবং বিশদে জানতে কোনও চিকিৎসক অথবা স্বাস্থ্য পরিষেবায় যুক্ত পেশাদারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

উৎসাহীরা এই বিষয়ে বিশদে জানতে পারেন MedicineNet এবং www.rxlist.com ওয়েবসাইটগুলিতে।

Google news