রঞ্জিত কাপড়ি, মহিষাদল: আর মাত্র ১৮ দিনের অপেক্ষা। লাল গ্রহ মঙ্গলে উড়তে চলেছে নাসা-র হেলিকপ্টার ‘ইনজেনুইটি।’ সেই যানের সঙ্গে জড়়িয়ে এ রাজ্যের নাম।
এর পিছনে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলের ঘাঘরা গ্রামের অনুভব দত্তের মস্তিষ্ক। মঙ্গলে প্রথম হেলিকপ্টার ওড়ানোর পিছনে চিফ ইঞ্জিনিয়ার জে বলরামের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর সঙ্গেই ইতিহাসের পাতায় যে দুই বঙ্গসন্তানের নাম লেখা থাকবে, তাঁদের মধ্যে একজন বর্ধমানের সৌম্য দত্ত এবং অন্যজন অনুভব। প্রায় সাড়ে তিন দশক আগে এই পরিকল্পনার কথা প্রথম এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে জানিয়েছিলেন তিনি। সেই পরিকল্পনাই অবশেষে বাস্তবায়িত হতে চলছে।
সব ঠিক থাকলে ১৮ দিন পর মঙ্গল গ্রহ ছোঁবে নাসার ল্যান্ডার ‘ইনজেনুইটি।’ এর ওজন প্রায় ৪ পাউন্ড। যার মধ্যে রয়েছে ৪ ফুট ব্যাসবিশিষ্ট দু’টি রোটার। প্রতি এক মাসে ৫ বার মঙ্গলের আকাশে উড়বে এই হেলিকপ্টার। মঙ্গল গ্রহ থেকে ১০০ মিটার উচ্চতায়।
ছেলের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে চলায় স্বাভাবিক ভাবেই খুশি অনুভবের মা মৃদুলা দত্ত। মহিষাদল গার্লস কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা তিনি। বাবা অমিত দত্ত ছিলেন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। মহিষাদলের বাসিন্দা হলেও মৃদুলা বর্তমানে কলকাতায় থাকেন। অনুভবও কলকাতার বাসিন্দা। কলকাতার সাউথ পয়েন্ট স্কুল থেকে ১৯৯৪-এ উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। রাজ্যে একাদশতম স্থান অধিকার করেন তিনি। এরপর খড়্গপুর আইআইটি। মেরিল্যান্ড ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি। তারপরে চলতে থাকে নিরন্তর গবেষণা।
অনুভবের এই সাফল্যে স্বাভাবিক উচ্ছ্বসিত সকলে। ঘাঘরা গ্রামে থাকেন তাঁর কাকা সঞ্জিত দত্ত। সঞ্জিত বলেন, ‘ছোট থেকেই অনুভব অত্যন্ত প্রতিভাবান। আর প্রবল ছটফটে। ওকে আমরা ফড়িং বলে ডাকতাম। সেই ফড়িং-এর হেলিকপ্টার মঙ্গল গ্রহে যাবে। এতে আমাদের গর্বের শেষ নেই।’ গর্বিত মা মৃদুলা দত্তের কথায়, ‘ছেলের এই সাফল্যে আমি খুবই খুশি। অনুভবের বাবার ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। আজ উনি বেঁচে থাকলে আরও বেশি খুশি হতেন।’