রিহানাদের আক্রমণ, নাম না করে নিশানা শাহেরও

নিউজ ডেস্ক: পপ তারকা রিহানা, পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ-সহ আন্তর্জাতিক বিশিষ্টদের সমালোচনার ‘মোকাবিলা’য় সরকার, বিজেপি নেতা, ভারতীয় সেলিব্রিটিদের টুইট চলছিলই। সেই তালিকায় নাম লেখালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

দিল্লি সীমানায় কৃষক আন্দোলনের ছবি পোস্ট করে রিহানা প্রশ্ন তুলেছিলেন — আমরা এ ব্যাপারে কথা বলছি না কেন? গ্রেটা জানিয়েছিলেন, তিনি কৃষকদের পাশে আছেন। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের ভাগ্নি মীনা হ্যারিস, বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক নেতারাও এ নিয়ে মুখ খোলেন। তারই মাঝে আন্দোলনস্থলে ক্রমশ দুর্গে পরিণত করার অভিযোগে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হন বিরোধী নেতারা। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এ নিয়ে নিন্দা চলে।
এ সবের মাঝে আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকে সমালোচনা উঠে আসায় কার্যত খানিক বিব্রত কেন্দ্রীয় সরকার। বিষয়টিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচার, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো ইত্যাদির মোড়কে পেশ করার চেষ্টা করেন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিরা।

টুইটে অমিত শাহ লেখেন — কোনও উদ্দেশ্যমূলক প্রচার ভারতের ঐক্যকে ব্যাহত করতে পারবে না। দেশকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছনো থেকে আটকাতে পারবে না। উদ্দেশ্যমূলক প্রচার নয়, কেবলমাত্র উন্নতিই ভারতের ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারে। উন্নতির পথে হাঁটতে ভারত ঐক্যবদ্ধ। নির্মলা সীতারামন, এস জয়শঙ্করের পাশাপাশি মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী, জি কিষান রেড্ডি, ভি কে সিংরাও টুইট করেন। আর বিজেপির সম্বিৎ পাত্র রিহানা এবং আর এক সমালোচক, প্রাক্তন পর্ন স্টার মিয়া খলিফাকে ‘অ্যান্টি ন্যাশনাল’ বলে দেগে দেন।
দেশের ঐক্য এবং সংহতি রক্ষার ডাক দিয়ে অক্ষয় কুমার, সুনীল শেঠি, অজয় দেবগনরা টুইট করেন। সরব হন সচিন তেন্ডুলকর, বিরাট কোহলি। স্বভাবসিদ্ধ ভাবেই চুপ থাকেননি কঙ্গনা রানাওয়াত।

রিহানাদের মুখ খোলার পর সরকারের তরফে জবাব দেওয়া হয়। সেখানে কারও নাম উল্লেখ করা না হলেও লেখা হয়েছে — কিছু স্বার্থান্বেষী লোক আন্তর্জাতিক স্তরে ভারত বিরোধিতা তৈরির চেষ্টা করছে। সরকারের দাবি — দেশের কিছু অংশে খুবই অল্প সংখ্যক কৃষক নতুন আইনের বিরোধিতা করছে। পুলিশ তাদের আন্দোলনকে যথাসম্ভব সংযত ভাবে সামলাচ্ছে বলেও কেন্দ্রের বক্তব্য।
কিন্তু বৃহস্পতিবারই বিরোধী নেতারা যে ভাবে আন্দোলনস্থলের পরিস্থিতির সমালোচনা করেছেন, তাতে কেন্দ্রের সেই দাবি কার্যত নস্যাৎ হয়ে গিয়েছে। এ দিন সকালে ১০টি বিরোধী রাজনৈতিক দলের ১৫ জন সাংসদ গাজিপুর সীমানায় যান।

এই প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন তৃণমূলের সৌগত রায়, ডিএমকে-র কানিমোঝি, এনসিপি-র সুপ্রিয়া সুলে, শিরোমণি অকালি দলের হরসিমরত কৌর বাদল-সহ অন্যেরা। কিন্তু পুলিশ তাঁদের ঘটনাস্থলে যেতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ।
হরসিমরত পরে টুইটে লেখেন — গাজিপুর সীমানায় পরিস্থিতি নিজে দেখে এলাম। অন্নদাতাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হচ্ছে, তা দেখে আমি স্তম্ভিত। কংক্রিটের চাঙড়, কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে যেন একটা দুর্গের মধ্যে তাঁদের আটকে রাখা হয়েছে। প্রয়োজন হলে অ্যাম্বুল্যান্স বা দমকলের গাড়িও আন্দোলনস্থলে পৌঁছতে পারবে না।

Google news