রেশন বন্টনে কারচুপি রুখতে রাজ্য সড়ক অবরোধ গ্রামবাসীদের 

 

নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহঃ  কিছুদিন আগেই রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল সমস্ত ধরনের রেশন কার্ডে বিনামুল্যে চাল দেওয়ার কথা। যার জেরে কার্ড পিছু একজন পাঁচ থেকে সাত কেজি করে চাল পাচ্ছেন।এক একটি পরিবার গড়ে পঞ্চাশ থেকে ষাট কেজি চাল পাচ্ছে।সেই চাল বাড়ি আনতে গিয়ে অটো, টোটো কিংবা রিক্সা ভাড়া করতে হচ্ছে।অন্যদিকে, লকডাউনের শুরু থেকেই রেশন বণ্টনে কারচুপিতে শিরনামে আসে মালদহের নাম।আজ বৃহস্পতিবারও তার অন্যথা হল না। ফের রেশন সামগ্রী বিতরণ ঘিরে তুলকানাম । রেশন সামগ্রী সময় মত না পাওয়ায় রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচীতে সামিল গ্রাহকরা। ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার রতুয়া-১ ব্লকের বাহারাল গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বাখরা গ্রামে ।

কারচুপিরও অভিযোগ ডিলারের বিরুদ্ধে।এই অভিযোগ তুলে ডিলারের দোকান ঘেরাও করে বিক্ষোভ শামিল হল গ্রাহকরা। বৃহস্পতিবার সকালে এই ঘটনা ঘিরে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয় রতুয়া-১ ব্লকের অন্তর্গত বাহারাল গ্রাম পঞ্চায়েতের বাখরা গ্রামে।পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে আসে রতুয়া থানার পুলিশ।অবশেষে সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত প্রায় ৪ ঘন্টা বিক্ষোভের পর রতুয়া-১ ব্লক প্রশাসনের খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে ছুটে এসে অবরোধকারীদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি সামাল দেন।

লকডাউনের জেরে রাজ্য প্রশাসনের তরফ থেকে বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী বিতরনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।সেইমতো চলছে রেশন দোকান গুলি থেকে গ্রাহকদের রেশন সামগ্রী বিতরণ।তবে এই সামগ্রী বিতরনে বারংবার একাধিক জায়গায় উঠে আসছে একাধিক অভিযোগ।এবারে বাহারাল অঞ্চলের বাখরা গ্রামের রেশন ডিলার মনজুর আলমের বিরুদ্ধে সামগ্রিক কারচুপির অভিযোগ তুলে সরব হলেন গ্রাহকরা। বৃহস্পতিবার রেশন গ্রাহকরা দোকানে গিয়ে দেখতে পান রেশন দোকান বন্ধ রয়েছে কি কারণে বন্ধ রয়েছে রেশন ডিলার মনজুর আলমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর দেননি এমনটাই অভিযোগ রেশন গ্রাহকদের।এরপরেই গ্রামের বাসিন্দারা ডিলারের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।দফায় দফায় ডিলারের দোকানের সামনে চলতে থাকে বিক্ষোভ।লকডাউনকে উপেক্ষা করেই গ্রাহকরা বাহারাল পরানপুর রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে।ক্রমেই গ্রাহকদের বিক্ষোভ চরম উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ছুটে আসে রতুয়া থানার পুলিশ।

লকডাউনের চরম মুহূর্তে অসহায় মানুষদের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যে নির্দেশিকা দিয়েছেন তা অমান্য করছে ডিলার।সরকারি নির্দেশিকা মতো সামগ্রী না পেয়ে মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।সঠিক পরিমাণে সামগ্রী পাওয়া ও প্রশাসন যেন এই ডিলারের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেন তার দাবি তুলেছেন গ্রাহকরা।
রেশন গ্রাহক নুর আলাম , সাদ্দাম হোসেন সহ আরো অনেকে অভিযোগ করে বলেন লকডাউনের ফলে কাজকর্ম বন্ধ হয়েছে।বাড়িতে ছোট ছোট বাচ্চারা না খেয়ে দিন গুজরান করছে।এদিকে রেশনে মাল পাচ্ছিনা চরম দুর্দিনে রয়েছি।প্রায় পাঁচদিন ধরে রেশন দোকান থেকে ফিরে বাড়ি যাচ্ছি তবুও মাল পাচ্ছিনা।গতমাসে পর্যাপ্ত মাল পাইনি। এমনকি বিগত কয়েক বছর ধরে এভাবেই দুর্নীতি করছে রেশন ডিলার। বাহির থেকেই ব্ল্যাকে রেশন সামগ্রী বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।রেশন ডিলারের কাছে প্রতিমাসে মান্থলি কাটমানি নিচ্ছেন ডিস্ট্রিবিউটার থেকে শুরু করে জেলা খাদ্য সরবরাহ আধিকারিকরা।

কাটমানি খেয়ে ডিলারদের দুর্নীতিতে মদত যোগাচ্ছে ওই সমস্ত আধিকারিকেরা।সকাল থেকেই প্রশাসনিক আধিকারিকদের ফোন করে জানিয়ে আসছি কিন্তু এখনো পর্যন্ত তাদের কোন পাত্তা নেই তাই আমরা আজ রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছি।আজ রেশন সামগ্রী না নিয়ে কোনমতেই বাড়ি ফিরব না।যদিও সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত রেশন ডিলারের ছেলে সুজন আলম।তার দাবি আমরা কয়েকজন মিলে অন্ন রেশন ডিলারের মাল টেগের মাধ্যমে বাহারাল গ্রাম পঞ্চায়েতের তিন জায়গায় রেশন সামগ্রী বিতরণ করছি,তাই এই দোকানে আগামী ৭ তারিখ থেকে রেশন সামগ্রী বিতরণ হবে।এই বিষয়ে গ্রাহকদের আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

এই বিষয়ে রতুয়া-১ ব্লকের বিডিও সারওয়ার আলীকে ধরা হলে তিনি জানান বাহারালের বাখরা এলাকায় রেশন সামগ্রী নিয়ে একটা গণ্ডগোল হয়েছিল।এই বিষয়ে রতুয়া-১ ব্লকের ফুড ইন্সপেক্টরকে সেখান ডেকে পাঠিয়েছিলাম সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে।

Google news