বিশ্বস্ত কর্মচারীকে বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছে মালিক,আর মালিকের বাড়িতেই দুঃসাহসিক চুরি !

নিজস্ব প্রতিনিধি , বসিরহাট: মন দিয়ে কাজ করত,হাতের কাজও ছিল নিপুণ। ধিরস্থির নম্র স্বভাব থাকায় মালিকের কাছে বিশ্বস্ত হতে সময় লাগেনি যুবকের। একসময় মালিক তার নিজের বাড়িতেই ওই যুবককে থাকতে দিয়েছিলেন। আর সেই বিশ্বাসকে ভর করেই মালিকের ঘরে চুরি করে যুবক ! স্বর্ণকারের বাড়ি থেকে ৬০০ গ্রাম সোনার গয়না যার বাজার মূল্য প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট  দেয় যুবক। তবে শেষ রক্ষা হয়নি , জুটল সেই শ্রীঘর।

বসিরহাটের ধলতিথা থেকে চন্দন মাইতি নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করল হরিয়ানা ও বসিরহাট থানার পুলিশ। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে নগদ ৭৫ হাজার টাকা সহ একটা সোনার চেন এবং কিছু টুকরো আনুমানিক ১৩০ গ্রাম মতো সোনা।

পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমরেশ বেড়া হরিয়ানার বিলাসপুরে  সোনার ব্যবসা করেন এবং সেখানেই বাড়ি ও দোকান রয়েছে তার। চন্দন মাইতির বাড়িও পশ্চিম মেদিনীপুরে। মালিক ও কর্মচারী একই জায়গায় থাকার সুবাদে দীর্ঘদিনের পরিচয় ছিল। তাদের দু-জনের মধ্যে। সেই সূত্রে বিলাসপুরে কাজ করতে যান চন্দন মাইতি।

সমরেশের বয়ান অনুযায়ী, চন্দন তাঁর দোকান থেকে ৬০০ গ্রাম সোনার গয়না যার বাজার মুল্য প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট দেয়।  হরিয়ানার বিলাসপুর থানায় চন্দনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন সমরেশ। তদন্তে নামে পুলিশ। অভিযোগের ভিত্তিতে চন্দন মাইতির ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে হরিয়ানা পুলিশ জানতে পারে অভিযুক্ত বসিরহাটে আশ্রয় নিয়েছেন। হরিয়ানা পুলিশ এই বিষয়ে বসিরহাট পুলিশকে বিস্তারিত জানায়।  সেইমত বসিরহাট থানার পুলিশ খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে বসিরহাট থানার ধলতিথা গ্রামে নাম ও পরিচয় আত্মগোপন করে বেশ কিছুদিন ধরে বসবাস করছিল অভিযুক্ত চন্দন মাইতি।

সোমবার গভীর রাতে বসিরহাট থানার আইসি সুরিন্দর সিংয়ের নেতৃত্বে হরিয়ানা পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর মোহনলাল ও তাঁর সঙ্গীদের সাথে নিয়ে অভিযান চালায়। চন্দন মাইতিকে গ্রেফতার করা হয়। এরমধ্যে  চুরি করা সোনা খানিকটা বিক্রি করে দেওয়ায় চন্দনের থেকে উদ্ধার হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা ও সামান্য কিছু সোনার গয়না। ধৃত চন্দনকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। হরিয়ানা পুলিশ তাঁকে ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছে বিচারকের কাছে। হরিয়ানা বিলাসপুর থানার এস আই মোহনলাল জানান, চন্দনকে হরিয়ানা নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানেই এই কেসের তদন্ত চলবে। চন্দনের গ্রেফতারের পর স্বাভাবিকভাবেই ধলতিথা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

Google news