ফের রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া বরাহনগরে! প্রায় ৬ দিন ধরে মা-বাবার দেহ আগলে রইলেন মেয়ে

এই ফ্ল্যাট থেকেই উদ্ধার হয় চিকিৎসক দম্পতির দেহ।

নিজস্বপ্রতিনিধি,বরাহনগরঃ ফের রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া কলকাতা শহরতলিতে।প্রায় ১ সপ্তাহ ধরে মা-বাবার দেহ আগলে রইলেন মেয়ে। রবিবার দুর্গন্ধ পেয়ে প্রতিবেশীরা স্থানীয় থানায় খবর দিতেই বহুতল আবাসন থেকে এক বৃদ্ধ চিকিৎসক দম্পতির পচা গলা মৃতদেহ উদ্ধার করল বরাহনগর থানার পুলিশ। মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়েকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। তবে দম্পতির অস্বাভাবিক মৃত্যু বলে প্রাথমিক অনুমান হলেও খুনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না পুলিশের।

ঘটনাটি বরাহনগর পৌরসভার অন্তর্গত ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর টি এন চ্যাটার্জি স্ট্রিটে লালবাড়ি বহুতল আবাসনের ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত চিকিৎসক দম্পতির নাম ডাঃ এ কে চৌধুরী এবং তাঁর স্ত্রীর নাম ডাঃ এস চৌধুরী। স্বামী এবং স্ত্রী তারা দুজনেই পেশায় ডাক্তার ছিলেন।এ.কে চৌধুরীর বয়স ৮০ বছর এবং স্ত্রীর বয়স ৭৮ এর কাছাকাছি।

স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই পরিবারটি আবাসন কিংবা পাড়ায় কারও সঙ্গে তেমন মেলামেশা করতেন না। ওই দম্পতির মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়ে দেবী ভৌমিক(৪৮) এবং তার একমাত্র মেয়ে ,এই চারজনই ওই আবাসনে থাকতেন। কিন্ত ঠিক কবে মারা যান ওই বৃদ্ধ দম্পতি তা কাউকেই জানায়নি,এমনকি আবাসনের পাশের আবাসিকদেরও জানায়নি ওই দম্পতির মেয়ে।এতদিন বাবা-মায়ের দেহ আগলে রেখে ছিলেন ওই মেয়ে।আজ পচা দুর্গন্ধ বেরনোয় আবাসিকদের মধ্যে থেকে কেউ থানায় ফোন করে জানালে বরাহনগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা ভেঙে উদ্ধার করে বৃদ্ধ দম্পতির দেহ।ওই চিকিৎসক দম্পতির পচা গলা দেহ উদ্ধার করে নিয়ে গিয়ে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেয়।

 পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ডাক্তার দম্পতি কম করে ৬দিন আগে মারা গিয়েছেন, অর্থাৎ চলতি মাসের ২৩ তারিখে মারা যান। প্রথমে ডাক্তার মারা যান এবং পরে তাঁর স্ত্রী মারা গিয়েছেন । পুলিশ সুত্রের খবর, মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়েকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করার পাশাপাশি    যেহেতু তাঁদের মেয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন তাই মেয়ের মানসিক পরিস্থিতির সুযোগে তাঁদের পরিচিত কোনও মানুষ এই কাজ করলেও করে থাকতে পারে। এইরকম বিভিন্ন সূত্র ধরে পুলিশ সত্য উদঘাটনের চেষ্টা শুরু করছে।

Google news