নিউজ ডেস্ক,খবর এইসময়ঃ শুভেন্দু অধিকারী জনসমক্ষে যেদিন তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যোগদান করেন, সেদিন তিনি মঞ্চে উঠে তাঁর বড়দা (অমিত শাহ)র পা-যুগলে প্রণাম করেই শুরু করেন তাঁর নতুন দলের রাজনৈতিক পরিচয়। আর সেদিনই শুভেন্দু বাবু মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছিলেন, তাঁকে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করতে বলেছিলেন যিনি তিনি আর কেউ নন ‘মুকুল’দা অর্থাৎ বিজেপি’র সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায়।
কিন্তু সেই মুকুল রায় আজ বিজেপি ছেড়েছেন। বর্তমানে তিনি তৃণমূলে। বলতে কোনও দ্বিধা নেই যে মুকুলের বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই বিগত তিন বছরে দলের এত বাড়বাড়ন্ত। মুকুলকে কাজে লাগিয়েই তৃণমূল ভেঙে বহু নেতা-কর্মী ওই সময় বিজেপিতে যোগ দেন এবং তাদের অনেকেই ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জয়ের মুখ দেখেন। এরপর খুব একটা আগ্রহী না থাকা সত্বেও ২০২১ সালের বিধানসভার নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মুকুল রায়। ওই নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী অভিনেত্রী কৌশানি মুখার্জিকে পরাজিত করে জীবনে প্রথম কোন নির্বাচনে জয়ের স্বাদ পান পোড়খাওয়া নেতা মুকুল রায়।
এদিকে,মুকুলের দলত্যাগের পর তাঁর বিধায়ক পদের কী হবে? সেই ব্যাপারে উঠেপড়ে লেগেছে বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁর সেই বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে বার বার সরব হয়েছেন যিনি তিনি হলেন, মুকুলের হাত ধরে গেরুয়া শিবিরে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারী। গত সোমবারই এনিয়ে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু তারপরেও বিধায়ক পদ থেকে সরে আসননি মুকুল রায়। তবে কার্যত হাল ছাড়তে নারাজ শুভেন্দু অধিকারী। তাঁরই একদা সতীর্থ মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের আবেদন নিয়ে বৃহস্পতিবার তিনি বিধানসভাতেও যান। কিন্তু সূত্রের খবর, যে সময় তিনি বিধানসভায় গিয়েছিলেন সেই সময় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন না। সেকারণের খোদ স্পিকারের হাতে চিঠি তুলে দিতে পারেননি শুভেন্দু।
এদিকে অধ্যক্ষ না থাকলে রিসিভিং বিভাগের কেউ চিঠি নিতে পারেন। কিন্তু সেই বিভাগেও কোনও কর্মী ছিলেন না বলে জানিয়েছেন শুভেন্দু। অগত্যা আবেদনপত্র জমা দিতে পা পেরেই তাঁকে ফিরে আসতে হয় এদিন। তবে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে দলত্যাগবিরোধী আইন প্রয়োগের ব্যাপারে গত কয়েকদিন ধরেই সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তবে এদিনও তিনি আবেদনপত্র দিতে না পারায় নানা চর্চা শুরু হয়েছে। অন্যদিকে গেরুয়া শিবিরের অন্দরমহল সূত্রে খবর, অত সহজে হাল ছাড়তে রাজি নন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। ফের শুক্রবার তিনি আবেদনপত্র নিয়ে বিধানসভায় হাজির হতে পারেন। কিন্তু ওইদিন কী স্পিকার তাঁর আবেদনপত্র গ্রহণ করবেন? সেই প্রশ্নটাই ঘুরছে রাজ্যের রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলে।