নিউজ ডেস্ক,ঝাড়গ্রাম: ভোট ঘোষণার আগেই জমে উঠেছে বঙ্গ রাজনীতি। সভা সমিতিতে ক্রমশ সুর চড়াচ্ছেন যুযুধান দু’পক্ষ। মঙ্গলবার সভায় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা দাবি করেন, বাংলার মানুষ পরিবর্তন আনার জন্য মনস্থির করে নিয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘বাংলা থেকে তৃণমূলকে উৎখাত করার সময় এসেছে। কারণ তৃণমূল সরকার নিরাপদ নয়। সে জন্যই এই ‘পরিবর্তন যাত্রা’র সূচনা হয়েছে৷’ আবার এদিনই কালনার সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে বাংলায় তৃতীয়বারের সরকার গঠনের দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী বিজেপিকে লুটের সরকার বলেও আক্রমণ শানান তিনি। কৃষক আন্দোলনের কথা তুলে ধরার পাশপাশি বিজেপিকে ভোট দিলে ত্রিপুরার বাঙালিদের মতো দুর্দশা হবে বলে দাবি করেন মমতা।
এদিকে বাংলায় অত্যাচার চলছে দাবি করে নাড্ডা বলেন, ‘সরস্বতী পুজো হোক বা দুর্গাপুজো, তা পালনের অনুমতি দেয় না বাংলার সরকার। রাম মন্দিরের শিলান্যাসের দিন এখানে লকডাউন করে দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু এর পাঁচ দিন আগে মহরমে অনুমতি দিয়েছিল রাজ্য সরকার৷ এর জবাব মানুষ দেবে৷ মে মাসে বাংলায় পরিবর্তন হবেই।’ তাঁর কথায়, ‘এখানে শুধুই কাটমানি, তোলাবাজি। আম্ফান ক্ষতিপূরণে বাংলাকে ২০৭৫ কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্র। হাইকোর্ট আম্ফান দুর্নীতির তদন্তের জন্য সিএজি তদন্তের নির্দেশ দেয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে মমতা সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় দুর্নীতিগ্রস্তদের আড়াল করতে৷ কাজ করছে শুধু মোদী সরকার আর তা আটকাচ্ছে তৃণমূল।’ এর আগেই অবশ্য কালনার রাজনৈতিক সভায় বাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বলেন, ‘দুর্গাপুজো, কালীপুজো ওদের কাছে শিখতে হবে নাকি। আমার বাড়িতে বহু আগে থেকে কালীপুজো হয়। ওরা বাংলার সংস্কৃতি জানে না। এক জন মনীষীর পদবি অন্য জনের সঙ্গে জুড়ে দিচ্ছেন। এই বাংলা সব ধর্মকে নিয়ে চলে। এখানে সাম্প্রদায়িকতার কোনও ঠাঁই নেই।’
এদিকে আদিবাসীরা এ রাজ্যে সুরক্ষিত নন বলে দাবি করে নাড্ডা বলেন, ‘বাংলায় আদিবাসী মহিলারা সুরক্ষিত নন। কেন্দ্র কম দামে চাল পাঠায়। কিন্তু রাজ্য তা দেয় না। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে শবর জাতির আট জন না খেতে পেয়ে মারা গিয়েছেন। জয় শ্রীরাম স্লোগান দিলেই মমতা রেগে যান। অন্যদিকে তোষণের রাজনীতি চালাচ্ছেন। রাজ্যে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে৷ বাংলায় ১৩০ জন বিজেপিকর্মী খুন হয়েছেন। বাংলায় সবচেয়ে বেশি মানব পাচার, মহিলাদের উপর অ্যাসিড অ্যাটাক, ধর্ষণ, গার্হস্থ্য হিংসা ও খুনের চেষ্টা হয়েছে৷’ এর পরেই তাঁর কটাক্ষ, ‘ভালো কাজ তো করতে পারবেন না, তাই এ বার প্রায়শ্চিত্ত করুন।’ যদিও এ রাজ্যের মহিলারাই সব থেকে নিরাপদ বলে দাবি করেছেন মমতা। এ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘আমার মা-বোনেরা বলুন তো রাত ৮টা বা ১০টায় নিরাপদে বেরোতে পারেন না আপনারা? এ রাজ্যে আমরা সকলের রেশনের ব্যবস্থা করেছি।’