শেখ হাসিনার ওপর আইনি ফাঁদ শক্ত করতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর (Sheikh Hasina) বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ গুলি তদন্ত করতে চলেছে,এর মানে শেখ হাসিনার….
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর (Sheikh Hasina) বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ গুলি তদন্ত করতে যাচ্ছে, এ জন্য জাতিসংঘের একটি দল ঢাকায় পৌঁছেছে। এর মানে শেখ হাসিনার ওপর আইনি ফাঁদ শক্ত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি।
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) কষ্ট শেষ হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বর্তমানে তিনি ভারতে নিরাপদে থাকলেও তার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। একদিকে মোহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শেখ হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করেছে, অন্যদিকে বাংলাদেশে হাসিনার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হয়েছে ৪৯টি।
বাংলাদেশে দীর্ঘতম সময় শাসন করা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৪০টি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়া মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার ৭টি, অপহরণ একটি মামলা এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মিছিলে হামলার একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
শেখ হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল
রিজার্ভেশন বিরোধী আন্দোলনের মধ্যে শেখ হাসিনা হঠাৎ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ৫ আগস্ট ভারতে আসেন। কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিলের কারণে ভারত থেকে অন্য কোনো দেশে যাওয়া তাদের পক্ষে এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অধিকাংশ মামলাই খুনের। একই সঙ্গে ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত সহিংসতার জন্যও তাকে দায়ী করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের কাছে তার প্রত্যর্পণের দাবি জানাতে পারে, যাতে বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের দাবি!
রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তৌহিদ হোসেন বলেছেন, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করতে যাচ্ছে, এ জন্য জাতিসংঘের একটি দল ঢাকায় পৌঁছেছে। এর মানে শেখ হাসিনার ওপর আইনি ফাঁদ শক্ত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। দলটির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শেখ হাসিনা সরকারবিরোধী বিক্ষোভ থামাতে ষড়যন্ত্র করেছেন, তাই ভারতকে তাকে হস্তান্তর করা উচিত যাতে শেখ হাসিনা তার অপরাধের শাস্তি পেতে পারেন।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তিতে কী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে?
২০১৩ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তিতে বলা হয়েছিল, কোনো দেশ যদি কোনো ব্যক্তিকে প্রত্যর্পণের দাবি করে যার বিরুদ্ধে ওই দেশের আদালতে মামলা রয়েছে, তাহলে অন্য দেশকে ওই ব্যক্তিকে হস্তান্তর করতে হবে। কিন্তু এই চুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারায় বলা হয়েছে যে যার প্রত্যর্পণ চাওয়া হচ্ছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ যদি রাজনৈতিক হয়, তাহলে অন্য দেশ সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের সম্ভাবনা খুবই কম। কিন্তু কোনো কারণে যদি এমন হয় তাহলে বাংলাদেশে তাদের সঙ্গে কী আচরণ হবে তা হয়তো ভাবাও যায় না।
ফেরার সময় অসুবিধা বাড়তে পারে
বিরোধীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের, গৃহবন্দি করা, কারাগারে পাঠানোসহ নানা অভিযোগের সম্মুখীন হয়েছেন শেখ হাসিনা। অন্তর্বর্তী সরকারে বসা লোকেরা অবশ্যই শেখ হাসিনাকে দোষী মনে করে, যে কারণে মাত্র ১৮ দিনে তার বিরুদ্ধে একের পর এক ৪৯টি মামলা হয়েছে। আগামী দিনে তাদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বাংলাদেশে শেখ হাসিনার জন্য অনেক ফৌজদারি মামলা এবং দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া অপেক্ষা করছে। এমতাবস্থায় পরিস্থিতি প্রতিকূল থাকলে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনে নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে।